আমাদের সম্পর্কে - Children Observer
Children Observer একটি অরাজনৈতিক ও অলাভজনক সামাজিক সংগঠন যা সমাজে বিরাজমান শিশুকিশোরদের স্বাভাবিক বেড়ে ওঠার অন্তরায় সকল সমস্যার মোকাবেলা ও সমাধানের পাশাপাশি তাদের জন্য একটা নতুন পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ যার ফলে তারা একটা নিরাপদ শৈশব উপভোগ করতে পারে।
আমাদের স্লোগান- "নিরাপদ হাতে, নিরাপদ শৈশব"
আমাদের মূলনীতিঃ
আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যঃ
বিস্তারিতঃ
অলাভজনক অর্গানাইজেশন যার প্রধান লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য শিশুদের জন্য অনুকূল একটা সমাজ গঠন যেখানে শিশুরা স্বাভাবিক ও সকল শিশুসুলভ সুযোগ সুবিধা নিয়ে বেড়ে উঠতে পারবে। আমাদের অর্গানাইজেশনের বিস্তারিত লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
আমাদের সমাজে এরকম অনেক অপরাধ রয়েছে যেগুলো গোপনে সমাজে দিনের পর দিন ঘটে যাচ্ছে। কিন্তু এগুলো গোপনে থাকার ফলে প্রতিবাদ ও অপরাধীদের শাস্তির কোনো উদাহরণ দেখা যায় না। কিন্তু এসব অপরাধের কারণে একজন শিশুর শৈশব চরম হুমকির মধ্যে পড়ে। শিশুদের সাথে ঘটা সবথেকে বড় একটা অপরাধ সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট। জাতিসংঘের একটা প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০ বছর বয়স হওয়ার আগেই প্রতি ১০ জন মেয়ে শিশুর একজন যৌন নির্যাতনের শিকার হয়। কিন্তু সমাজে পর্যবেক্ষণ করলে সংখ্যাটা এর থেকেও অনেক বেশি হবে। শিশুরা এতটাই ইমম্যাচিউর যে এই ধরণের ঘটনার প্রতিবাদ কিভাবে তারা করবে সে বিষয়ে তাদের কোনো ধারণা থাকে না। পাশাপাশি পরিবারের মানুষও সন্তান ছোট থাকায় এই ধরণের ঘটনাতে তেমন একটা আলোকপাত করে না। অন্যদিকে অনেকে সামাজিক সম্মানের ভয়ে এগুলো জানার পরেও প্রতিবাদ করে না। কিন্তু একজন শিশুর পরবর্তী জীবনের বিকাশে এধরণের ঘটনা অনেক বড় প্রভাব বিস্তার করে।
আমাদের অর্গানাইজেশনের প্রধান একটা লক্ষ্য এই ধরণের সেনসিটিভ বিষয়ে সমাজে সচেতনতা সৃষ্টি। পাশাপাশি সমাজে যেন এই ধরণের গোপন অপরাধ প্রমোটেড না হয় সেই লক্ষ্যে সরাসরি এই প্রচার না করে কিছুটা ভিন্ন পন্থা অবলম্বনের মাধ্যমে সমাজে সচেতনতা সৃষ্টি। এক্ষেত্রে কিভাবে নিজের সন্তানের জন্য সঠিক পরিবেশ নিশ্চিত করা যায় সেই বিষয়ে আমরা প্রচারণামূলক সেমিনার এর ব্যবস্থা করব। যেখানে অভিভাবকদের মধ্যে সচেতনতামূলক আলোচনা সহ নিজের সন্তানের জন্য কি কি পদক্ষেপ নিতে হবে তার নিরাপদ ও সুরক্ষিত শৈশবের জন্য সে বিষয়ে বিশদ জ্ঞান প্রদান করা হবে।
বর্তমানে শিশুদের জন্য সবথেকে বড় একটা ঝুঁকি হলো স্মার্টফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার। সাম্প্রতি এক গবেষণায় জানা গিয়েছে বাংলাদেশের প্রায় ৮৬ শতাংশ শিশুই স্কুলে ভর্তির আগেই স্মার্টফোনে আসক্ত এবং যার মধ্যে ২৯ শতাংশের মধ্যে এই আশক্তি খুবই মারাত্মক পর্যায়ে রয়েছে। প্রযুক্তি মানুষের জন্য একটা আশির্বাদ। কিন্তু শিশুদের জন্য এটা একটা অভিশাপে রূপ নিয়েছে। বাবা মা নিজ থেকে শিশুর হাতে তাদের স্মার্টফোন তুলে দেয় যার ফলে শিশুদের প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট দুষ্টুমি, খেলাধুলা এগুলো বাদ দিয়ে কৃত্রিম ফাদ মোবাইল ফোনে আসক্ত হয়ে পড়ে এবং ডিস্টার্ব এর মাত্রা কম থাকে। ৭৩ শতাংশ মা তাদের বাচ্চাদের হাতে স্মার্টফোন তুলে দিয়ে ব্যস্ত রাখে কোনো ঝামেলা ছাড়া নিজেদের কাজ করার জন্য। একজন সাধারণ শিশু থেকে একজন স্মার্টফোনে আসক্ত শিশুর স্বাস্থ্য ঝুঁকি ২৩০ গুণ বেশি। অতিরিক্ত মোবাইল ফোনের আসক্তি একজন শিশুর মানুষিক বিকাশে বড় বাধার সৃষ্টি করে। আমাদের সচেতনতামূলক সেমিনার এর মাধ্যমে অভিভাবকদের মধ্যে এসব বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করা হবে।
শিশুদের মস্তিষ্ক অত্যন্ত সেনসিটিভ থাকায় কোনো ঘটনা তাদের মস্তিষ্কে অনেক বড় প্রভাব ফেলে। তাই শিশুদের মধ্যে একটা মানুষিক প্রভাব দেখা দেয় যেটা ভবিষ্যতে অনেক বড় সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই শিশুদের মানুষিক স্বাস্থ্য সহায়তা প্রদানের মাধ্যমে তাদের শৈশবকে নিরাপদ ও সুরক্ষিত রাখা|
আমাদের জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ দুষনের ফলে শিশুদের মধ্যে অনেক বড় প্রভাব পড়ছে। তাদের মানুষিক ও শারিরীক স্বাস্থ্য বিকাশ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। এসব সমস্যা মোকাবেলা করা এবং পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া আমাদের লক্ষা। শিশুদের স্বাস্থ্যের উপর পরিবেশ দুষনের প্রভাব সমর্কে মানুষকে বোঝানোর মধ্যমে সমাজে সচেতনতা সৃষ্টি করা।
শিশুদের মধ্যে ৭৯ শতাংশ শিশু কার্টুন দেখার জন্য মোবাইল ফোন ব্যবহার করে। কিন্তু কার্টুন থেকে তারা প্রোডাক্টিভ কিছুই শিখতে পারে না। তাই শিশুদের জন্য কার্টুন তৈরি করা যাতে তারা যতটুকু সময় কার্টুন দেখার পেছনে নষ্ট করে সেই সময়টাতে যেন তারা প্রোডাক্টিভ কিছু শিখতে পারে এবং সাইক্লোজিক্যালি সচেতন ও হতে পারে। এছাড়া শিশুদের জন্য বিভিন্ন ম্যাগাজিন এর ব্যবস্থা করা। যার ফলে শিশুদের মধ্যে সাইবার সুরক্ষা নিশ্চিত হবে। এছাড়া অভিভাবকদের সচেতনতার জন্য বিভিন্ন পাবলিকেশন এর ব্যবস্থা করা। আমাদের দেশে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদেরকে সমাজ স্বাভাবিক ভাবে নেয় না। যার ফলে সমাজে তাদেরকে প্রতিটা পদে পদে হ্যানস্তার স্বীকার হতে হয়। সমাজে তাদের জন্য বৈরি একটা পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এই সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য একটা সুন্দর শিশুবান্ধব সমাজ গঠন করা।
.
.
আমাদের দেশের জন্য আরো একটা বড় সমস্যা হলো সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য সঠিক পরিবেশ না থাকা। সমাজ যেন তাদের জন্য এক যুদ্ধ ক্ষেত্র। তাদের জন্য সমাজে কোনো ধরণের সুযোগ সুবিধা নেই। যার ফলে শিক্ষা, খাদ্য, বাসস্থান সকল ক্ষেত্রেই তাদের জন্য একটা বৈরি পরিবেশ তৈরি হয়ে আছে। এসকল সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য সুযোগ সুবিধা তৈরি করা।
সর্বোপরি শিশুদের কল্যান ও বিকাশে সকল পদক্ষেপ গ্রহণ এবং সুন্দর সমাজ গঠন আমাদের অর্গানাইজেশনের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।